ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রাঙ্গণ থেকে পুলিশের চোখে-মুখে পিপার স্প্রে করে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় দায় স্বীকার করেছে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলাম। ‘দাওয়ালিল্লাহ’ নামে ওয়েবসাইটে এক বিবৃতিতে নিজেদের দায় স্বীকার করেছে জঙ্গি সংগঠনটি।
বিবৃতিতে সংগঠনটি বলেছে, ‘আলহামদুলিল্লাহ, প্রকাশক দীপনকে হত্যাকারী দুই মুজাহিদ ভাইকে আদালত প্রাঙ্গণ থেকে অপর দুই মুজাহিদ ভাই মুরতাদ বাহিনীর কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। আল্লাহ তাদের রক্ষা করুন, হাফিযাহুমুল্লাহ তালা।
’
এ বিষয়ে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের উপকমিশনার (ডিসি) এসএম নাজমুল হক বলেন, ‘জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনায় দাওয়ালিল্লাহ নামে ওয়েবসাইটে আনসার আল ইসলামের বিবৃতির কথা আমরাও জানতে পেরেছি। ’
জানা গেছে, ‘দাওয়ালিল্লাহ’ আনসার আল ইসলাম পরিচালিত একটি ওয়েবসাইট। ওই সাইটে এর আগেও বিভিন্ন সময় আনসার আল ইসলাম তাদের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে বিভিন্ন লেখা পোস্ট করেছিল। গত আগস্টে আল কায়েদার শীর্ষ নেতা আয়মান আল-জাওয়াহিরি ড্রোন হামলায় নিহত হওয়ার পর প্রতিশোধের হুমকি দাওয়ালিল্লাহের বিবৃতির মাধ্যমে দেওয়া হয়। তবে সংগঠনের গোপন কর্মকাণ্ড নিয়ে কখনও ‘ওপেন সাইটে’ উগ্রপন্থিরা কোনো পোস্ট দেন না। এ ছাড়া নিজেদের মধ্যে যোগাযোগের জন্য তারা বিশেষ কিছু অ্যাপ ব্যবহার করে।
সাইটটি পরিচালনায় তিন থেকে চারজন অ্যাডমিন থাকেন। তাদের সবার ওপরে থাকেন সুপার অ্যাডমিন। গোয়েন্দারা বলছেন, এই সাইটের অন্যতম একজন অ্যাডমিন হলেন মেজর (বরখাস্ত) সৈয়দ জিয়াউল হক জিয়া।
গত ২০ নভেম্বর পুরান ঢাকার আদালত চত্বর থেকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া মইনুল হাসান শামীম ওরফে সিফাত ওরফে সামির ওরফে ইমরান এবং আবু সিদ্দিক সোহেলকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়। তবে শামীম ও সোহেলের আরও দুই ঘনিষ্ঠ সহযোগী ফাঁসির দণ্ডাদেশ পাওয়া আরাফাত রহমান ও মো. সবুরকে ছিনতাই করতে ব্যর্থ হয় তাদের সহযোগীরা। জঙ্গি ছিনতাইয়ের এক সপ্তাহ পার হলেও শামীম ও সোহেলের খোঁজ মেলেনি। ধরা পড়েনি তাদের মূল সহযোগীরা। পুলিশের ভাষ্য, তারা দেশের ভেতরে কোথাও লুকিয়ে থাকতে পারে।
এ ব্যাপারে সিটিটিসির প্রধান ডিআইজি মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘ছিনতাইকাণ্ডে অংশ নেওয়া বেশ কয়েকজন জঙ্গিকে আমরা শনাক্ত করেছি। তাদের নাম-পরিচয়ও পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, পালানো দুই জঙ্গি সীমান্ত পারি দিতে পারেনি।